বুধবার ১লা মে, ২০২৪ ইং ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গুজবে দিশাহারা দেশ!

আকাশবার্তা ডেস্ক :

  • থানকুনি পাতার রসে করোনার নিরাময়
  • মিথ্যা তথ্য ছড়ানো রোধে তৎপর প্রশাসন
  • গুজবে শাস্তি ১৪ বছর জেল-জরিমানা
  • থানকুনি পাতার সন্ধানে মহিলা, শিশু ও পুরুষদের নির্ঘুম রাত
  • গুজব নিয়ন্ত্রণে আসছে নতুন আইন

করোনা ভাইরাস। বিশ্বের অন্তত ১৭২টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি। জনমনে রীতিমতো ভয়াবহ আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে ভাইরাসটি। দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

এমনকী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে একজনের মৃত্যুও হয়েছে। ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে এখনো তৈরি হয়নি কোনো ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক।

এরই মধ্যে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক হিসেবে ভেষজ উদ্ভিদ থানকুনি পাতার নাম। থানকুনি পাতার রস খেলে মিলবে করোনা থেকে মুক্তি। ফলে গ্রাম-গঞ্জ, পাড়া-মহল্লার সবাই মুহূর্তেই হুমড়ি খেয়ে পড়ে থানকুনি পাতা সংগ্রহ ও সেটার রস খেতে।

মূলত প্রথমে বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া ও উজিরপুর উপজেলায় গত মঙ্গলবার গভীর রাতে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, তিনটি থানকুনি পাতা খেলে করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

তবে ফজরের নামাজের আগেই এ পাতা খেতে হবে। এ গুজব ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ দিন দিবাগত রাত ২টা থেকে ফজর নামাজের আগ পর্যন্ত পাতা খাওয়ার হিড়িক পড়ে যায়। কোথাও কোথাও থানকুনি পাতা খেতে মাইকযোগে আহ্বান জানানো হয়।

থানকুনি পাতা খেয়েছেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের স্বজনেরা রাত ৩টায় হঠাৎ ফোন দিয়ে জানান, থানকুনি পাতা খেলে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) থেকে মুক্তি মিলবে।

এ খবর পাওয়ার পর তারা রাতেই পাতার সন্ধানে নামেন এবং বাড়ির আঙিনা ও আশপাশের জঙ্গল থেকে পাতা তুলে খেয়ে নেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, থানকুনি পাতা খেলে করোনা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে এই ?গুজবেই বেশি কান দিয়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। যেসব আলেমের নাম বলা হয়েছে তারাও বেশির ভাগের বাড়ি দক্ষিণাঞ্চলে।

তবে কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি কোন আলেম তাদের স্বপ্নে পাওয়ার কথা বলেছেন। সবারই ভাষ্য তারা শুনেছেন।

এদিকে গুজবে পড়ে থানকুনি পাতা খেয়েছেন এমন বেশ কয়েকজনের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেউ ছারছীনার পীর, কেউ আবার চরমোনাই পীর স্বপ্ন দেখে থানকুনি পাতা খাওয়ার কথা বলেছেন বলে দাবি করেন।

কেউ আবার জৈনপুরী, বরগুনার চলাভাঙ্গার পীর, পটুয়াখালীর চৈতার পীর, মির্জাগঞ্জের মাওলানা মোতাহার হোসেন (সুফি সাহেব) এসব বলেছেন বলে দাবি করেন।

দেশে নতুন নতুন ইস্যুতে গুজবের ঘটনা এই প্রথম নয়, বেশ কিছুদিন আগে পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা প্রয়োজন, এজন্য ছেলেধরা নেমেছে, পেঁয়াজের মতো লবণের দামও ২০০ টাকা কেজি হবে, বিদ্যুৎ থাকবে না, তখন ছেলেধরা আসবে এরপরই ডেঙ্গু নিয়ে বেসিনে হারপিকসহ কেমিক্যাল ঢেলে দিলে ডেঙ্গু নিধন সম্ভব হবে বলে গুজব ছড়ানো হয়।

এমনকী গুজব ছড়িয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা হয়েছিল। জনমনে তৈরি করা হয়েছিল আতঙ্ক। আর এসব গুজবের অধিকাংশই ছড়ানো হয়েছিল বা হচ্ছে ফেসবুক, টুইটার, জি-প্লাস, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

গুজব নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন থাকা সত্ত্বেও আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় প্রতিনিয়তই এর বিস্তার ঘটছে। আর গুজবের শিকার হয়ে সামাজিকভাবে অপমান-অপদস্থ হয়ে প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটছে।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গুজবটা অনেক সময় ইচ্ছাকৃতভাবেই ছড়ানো হয়। কিন্তু গুজব ছড়ানোর পর এর সাথে জড়িতরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় বলেই এটা রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

গুজবকারীদের ধরে প্রচলিত আইনে বিচারের ব্যবস্থা করলেই আর কেউ গুজব ছড়াতে সাহস পাবে না। শাস্তির নজির নেই বলেই গুজব রটনাকারীরা এতো বেপরোয়া।

তাদের দাবি, সাইবার অপরাধ আইন দিয়ে গুজবের যথার্থ বিচার করা সম্ভব নয়।

সুতরাং যেহেতু সাম্প্রতিকালে গুজবের ভয়াবহতা বেড়েই চলেছে তাই এটা রোধ করতে হলে গুজব-সংশ্লিষ্ট আইন তৈরি করা জরুরি বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মিথ্যা সংবাদ প্রচার করাকে সামাজিক সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেছেন অন্তত ৮০-৯০ শতাংশ মানুষ।

এদিকে যেকোনো ধরনের গুজব ছড়ানো ও গণপিটুনির ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ এ নির্দেশনা দেন।

গত বছরের জুলাই মাসে রাজধানীতে তাসলিমা বেগমসহ গণপিটুনিতে বেশ কয়েকজনকে হত্যার প্রেক্ষাপটে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ১ মার্চ এই নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।

আদালতের দেয়া পাঁচ দফা নির্দেশনাগুলো হলো—
১. পুলিশের প্রত্যেক সার্কেল অফিসার (এএসপি) তার অধীনের প্রতিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে ৬ মাসে অন্তত একবার গণপিটুনি প্রবণতার বর্তমান অবস্থা নিয়ে বৈঠক করবেন।

২. গণপিটুনির বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার প্রচার কার্যক্রম ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে প্রচারণা অব্যাহত রাখবে।

৩. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেকোনো ধরনের অডিও, ভিডিও, খুদে বার্তা, যা গুজব সৃষ্টি বা গণপিটুনিতে মানুষকে উত্তেজিত করতে পারে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তা বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যে দুষ্কৃতকারীরা এ কাজে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

৪. যখনই গণপিটুনির কোনো ঘটনা ঘটবে, কোনো রকম দেরি না করে তখনই থানার ওসি এফআইআর নিতে বাধ্য থাকবেন এবং তা সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপারকে অবহিত করবেন।

৫. গণপিটুনিতে তাসলিমা বেগম হত্যার ঘটনায় ঢাকা জেলা শিক্ষা অফিসার উত্তর বাড্ডা প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অবহেলার ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।

গুজবে আইন লঙ্ঘন বিচার প্রক্রিয়া ও শাস্তি : অনলাইন ব্যবহার করে কেউ কোনো অপরাধ করলে সংক্ষুব্ধ বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থানায় অভিযোগ করতে পারে।

ওই অভিযোগের ভিত্তিতে অথবা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সোস্যাল মিডিয়া মনিটরিং টিমের পর্যবেক্ষণে যদি অপরাধ হয়েছে বলে যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকে তাহলে অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে অবহিত করে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করতে পারবেন। পুলিশ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা (ওয়ারেন্ট) ছাড়াও গ্রেপ্তার করতে পারে।

এ অপরাধ কিন্তু জামিন-অযোগ্য। কোনো অপরাধী, ব্যক্তি বা সংগঠনের ফেসবুক, স্কাইপ, টুইটার বা ইন্টারনেটের যেকোনো মাধ্যমের অপরাধ-সংশ্লিষ্ট আলাপ-আলোচনা ও কথাবার্তা অথবা অপরাধ-সংশ্লিষ্ট স্থির ও ভিডিওচিত্র অপরাধের আলামত হিসেবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আদালতে উপস্থাপন করতে পারবেন এবং আদালতে আমলযোগ্য হবে।

অর্থাৎ সাক্ষ্য আইনে যাই থাকুক না কেন, মামলার স্বার্থে তা আদালতের গ্রহণযোগ্য হবে। অপরাধ প্রমাণিত হলে, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩)-এর ৫৭ (দুই) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে অপরাধ করলে তিনি শাস্তি সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং সর্বনিম্ন ৭ বছর কারাদণ্ড এবং এক কোটি টাকা পর্যন্ত অথদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

অন্যদিকে ডিজিটাল গুজব নিয়ন্ত্রণের জন্য ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ পাস করা হয়।

নতুন আইনের ১৭ থেকে ৩৮ ধারায় বিভিন্ন অপরাধ ও শাস্তির বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। কেউ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রপাগাণ্ডা চালালে ১৪ বছরের জেল ও এক কোটি টাকা জরিমানা।

২৫ ধারায় বলা হয়েছে, কেউ যদি ডিজিটাল মাধ্যমে আক্রমণাত্মক ভয়ভীতি দেখায়, তাহলে তাকে তিন বছরের জেল ও তিন লাখ টাকা জরিমানা।

২৮ ধারায়, কেউ যদি ধর্মীয় বোধ ও অনুভূতিতে আঘাত করে, তাহলে ১০ বছরের জেল ও ২০ লাখ টাকা জরিমানা। ২৯ ধারায়, মানহানিকর কোনো তথ্য দিলে তিন বছরের জেল ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা।

৩০ ধারায়, না জানিয়ে কেউ যদি কোনো ইলেকট্রনিকস ডিভাইস ব্যবহার করে, তাহলে পাঁচ বছরের জেল ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

৩১ ধারায়, ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে কেউ অরাজকতা সৃষ্টি করলে সাত বছরের জেল ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা।

৩২ ধারায়, সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কেউ যদি বেআইনিভাবে প্রবেশ করে কোনো ধরনের তথ্য-উপাত্ত, যেকোনো ধরনের ইলেকট্রনিকস যন্ত্রপাতি দিয়ে গোপনে রেকর্ড করে, তাহলে ১৪ বছর কারাদণ্ড ও ২০ লাখ টাকা জরিমানা। ডিজিটাল ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাসের সবগুলো ধারাই ভয়ঙ্কর। তবে ৩২ ধারায় সাংবাদিকরা হয়রানির শিকার হতে পারেন বলে আশঙ্কা রয়েছে।

দ্রুতই গুজব নিয়ন্ত্রণে আসছে নতুন আইন : 

তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ গুজব বা বিভ্রান্তি ছড়ালে ফেসবুক, ইউটিউবসহ সার্ভিস প্রোভাইডারগুলোকে জরিমানা করার বিষয়ে অচিরেই আইন করা হচ্ছে।

নতুন বিধিমালায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে যদি গুজব ছড়ানো হয়, বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়, অসত্য খবর ছড়ানো হয়, তবে ফেসবুক, ইউটিউব কর্তৃপক্ষকে অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সার্ভিস প্রোভাইডারদের জরিমানা করার বিধান থাকবে।

আগামী জুলাইয়ের মধ্যে সব সমপ্রচার মাধ্যমকে ডিজিটালাইজড করা হবে। সমপ্রচার নীতিমালা তৈরি হলে টিভি সাংবাদিকদের আইনি সুরক্ষা দেয়া সম্ভব হবে।

এগুলোসহ সব ধরনের গুজব রোধে বিদ্যমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় নতুন বিধিমালা করতে যাচ্ছে সরকার। এছাড়া সমপ্রচার নীতিমালার আলোকেও গুজব বন্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া যায় কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

যেখান থেকে প্রথম গুজবের উৎপত্তি : 

প্রথম ভয়ঙ্কর গুজবের ঘটনা ১৭৫০ সালে ফ্রান্সে। দেশটির রাজধানী প্যারিসের রাস্তা থেকে শিশুরা অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছিলো। কেউ জানতো না কেন হচ্ছে। তাদের মা-বাবারা রাস্তায় দাঙ্গা করতো।

এই খারাপ সময়ের মাঝখানে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে রাজা লুইস কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং তিনি বাচ্চা অপহরণ করতেন যাতে তাদের রক্তে গোসল করতে পারেন (সে সময় শিশুদের রক্তে গোসল করলে কুষ্ঠ রোগ ভালো হয় বলে ধারণা ছিলো)।

তবে গুজবের মধ্যে কিছু সত্যতা ছিলো। কর্তৃপক্ষ শিশুদের নিয়ে যাচ্ছিলো, কিন্তু রাজপ্রাসাদে না। অনাকাঙ্ক্ষিতদের রাস্তা থেকে সরিয়ে নেয়ার জন্য পুলিশদের অর্থ প্রদান করা হয়েছিল এবং রাস্তায় কোনো শিশু পাওয়া গেলেই তাদের আটক করে নিয়ে যাওয়া হতো।

সৌভাগ্যবশত বেশির ভাগই তাদের বাবা-মায়ের সাথে পুনরায় মিলিত হয় এবং রাজার ভয়াবহ স্নান অনুষ্ঠানের গুজবগুলো বিশ্রামে চলে যায়। প্যারিসের রাজার রক্তস্নানের গুজব বিশ্রামে গেছে সত্যি; তবে ২৭০ বছর পরও গুজব কিন্তু থেমে নেই। এটি নানা দেশে নানাভাবে আজও টিকে রয়েছে।

অনেকে ছোটবেলা থেকে শুনে আসছে যে ব্রিজ কালভার্ট সেতু নির্মাণের সময় মানুষের রক্ত লাগে; বলি দেয়া হয়। যদিও কখনো কেউ দেখেনি নিজের চোখে কাউকে বলি দেয়া হলো কি-না। এত বছর পর খুব জোরালোভাবে আবারো সেই গুজব। সেটি বাংলাদেশেই।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জামান আকতার বুলবুল আমার সংবাদকে বলেন, গুজব দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে কিন্তু এটা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

তাই অপপ্রচার ও গুজব নিয়ন্ত্রণ করতে হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আলাদা একটা মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে। যারা গুজব ছড়াচ্ছে তাদের ধরে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হলে গুজব ছড়ানো হ্রাস পাবে বলে আমার মনে হয়।

যেহেতু এখন প্রযুক্তির যুগ তাই পুলিশের অন্যান্য বিষয়ের মতো গুজবের দিকেও বিশেষভাবে নজর দিতে হবে তবেই এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, আসলে অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার জানে না।

যার ফলে কোনটা ভুয়া আর কোনটা সঠিক বিচার না করেই সেটা ছড়িয়ে দেয়। বিভিন্ন সময় যারা গুজব ছড়াচ্ছে তাদের শাস্তিও দেয়া হচ্ছে। তবে গুজব নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে বেশি দরকার সচেতনতা। আর সেটার দায়িত্ব প্রশাসনেরই নিতে হবে।

     এই বিভাগের আরও সংবাদ

আর্কাইভ

মে ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« এপ্রিল    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১